জয়পুরহাটে ইউপি সদস্যের হাত-পা গুঁড়িয়ে দিল বিএনপি কর্মীরা

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ ঘন্টা আগে

জয়পুরহাটের কালাইয়ে ফেরদাউস হত্যা মামলার সাক্ষী হওয়ায় এবং চাঁদার টাকা না দেওয়ায় নুরনবী মন্ডল নামে এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের ওপর অতর্কিত হামলার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ইয়াকুব আলী ও তার অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

সোমবার (৫ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের ম্যাড়েরপুকুর নামক স্থানে এই নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে। আহত নুরনবী মন্ডল বিয়ালা গ্রামের ওসমান গনি মন্ডলের ছেলে। তিনি মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ সদস্য এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে বিয়ালা এলাকার ধুনট পুকুরে ফেরদাউস নামে হোপ গ্রামের এক যুবককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় কালাই থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি নেতা ইয়াকুব আলীর ছোট ভাই রেজাউল ইসলাম আসামি হন। মামলায় সাক্ষী ছিলেন আহত নুরনবী মন্ডল।

পরিবারের অভিযোগ, ওই হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই বিএনপি নেতা ইয়াকুব আলী নুরনবীকে চাপে রাখেন এবং গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করতে থাকেন। চাঁদা না দেওয়ায় নুরনবীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার বিকেলে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়।

এদিন ইউনিয়ন পরিষদের কাজ শেষে মোটরসাইকেলযোগে বিয়ালা বাজারে যাওয়ার সময় ম্যাড়েরপুকুর নামক স্থানে পৌঁছালে নুরনবীর গতিরোধ করে অতর্কিতে হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী। বিএনপি নেতা ইয়াকুব আলীর ছোট ভাই রেজাউল ইসলাম, মাত্রাই ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপি কর্মী তাজমহল, রেজাউল করিম, জনাব আলী, আব্দুল করিমসহ ১৫-২০ জন দেশীয় অস্ত্রসহ এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।

একপর্যায়ে তারা নুরনবীর হাত ও পা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় এবং তাকে রাস্তা থেকে টেনে এনে পাশের পুকুরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাত ৯টার দিকে তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

আহতের স্ত্রী রোজিনা বেগম জানান, ফেরদাউস হত্যা মামলার সাক্ষী হওয়ার কারণে ৫ আগস্টের পর ইয়াকুব আলী আমাদের বাড়িতে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এরপর সে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

টাকা না দেওয়ায় আমার স্বামীকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। আমরা এর ন্যায়বিচার চাই। তিনি আরো বলেন, ইয়াকুব আলী একজন কুখ্যাত ব্যক্তি। কিছুদিন আগেও সে বিয়ালাসহ আশপাশের গ্রামে লুটপাট ও ভাঙচুর চালিয়েছে।’

অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ইয়াকুব আলী মন্ডল বলেন, নুরনবীকে মারধরের বিষয়ে শুনেছি, তবে কে বা কারা করেছে তা জানি না। তবে সে আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার সাক্ষী।

কালাই থানার ইনসপেক্টর (তদন্ত) এসএম কামাল হোসাইন বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • ইউপি সদস্য
  • জয়পুরহাট
  • বিএনপি কর্মীরা
  • হাত-পা গুঁড়িয়ে
  • #