নিখুঁত অভিনয়শৈলী ও মোহনীয় সৌন্দর্যের অধিকারী জয়া আহসান। দুই বাংলায় জনপ্রিয়তার শিখরে অবস্থান করছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই জয়ার ব্যক্তিজীবন নিয়ে কৌতূহলী তার ভক্তরা। আমদের দেশের জামদানি ও মসলিনের প্রচার-প্রসারেও নিজ থেকে কাজ করেন জয়া আহসান। বিভিন্ন আলাপচারিতায় জয়া বলেন, আমার চারপেয়ে পোষ্য আছে না!
প্রকৃতির অপার মহিমা জয়া তার জীবনাচারণে ধারণ করে সামনে আগান। প্রকৃতির কোনো কষ্ট দেখলে তার কোমল হৃদয়ে নাড়া দেয়। সম্প্রতি তার ফেসবুক পেইজে পীড়িত বিভিন্ন প্রাণীদের বহু পোস্ট দেখা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে কুকুর, বিড়াল, গরু, ঘোড়া, বানর, চিতাবাঘ। এছাড়া রয়েছে কাঁটাবন পশুপাখির ভিডিও, তীব্র তাপপ্রবাহে এসব পশুপাখির লাগামহীন দুর্ভোগের দৃশ্য তুলে ধরেছেন তার ফেসবুক পেইজে।
তার ফেসবুক ওয়াল ঘুরে দেখা যায়- একটি কুকুক হারিয়ে গেছে তার পোস্ট শেয়ার করা। সেখানে লেখা- ‘খুঁজে দিতে পারলে ৫০০০ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। আমার আদরের ম্যাগনেট ১৬ মার্চ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ বড় মাদরাসা এলাকা থেকে হারিয়ে গেছে । গলায় লাল রঙের বেল্ট লাগানো আছে।’
জয়া আহসানের আরো একটি পোস্টে দেখা যায়- ‘ধন্যবাদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, গরমের জন্য ভার্সিটি এক সপ্তাহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই ভিসি স্যার এই নির্দেশ দিয়েছেন যাতে এই অবলা অসহায় বাচ্চাগুলো খাওয়ার কষ্ট না পায়।
তার আরেকটি পোস্টে দেখা যায়- ‘রূপসা রিভার ভিউ পার্ক, খুলনা। এই বানরটি এখানে আটকে আছে অত্যন্ত মানবেতরভাবে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী কেউ বানর আটকাতে পারবেন না। পালতে পারবেন না। হয়তো এখানকার কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানেন না। এমনও হতে পারে মালিকানা পরিবর্তন হবার পর বানরটি নিয়ে তারা ভাবেননি।আমরা খুলনার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অঞ্চলের বনকর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। স্থানীয়রা কেউ আমাদের সহযোগিতা করতে পারলে উদ্ধার কাজটা দ্রুত করতে পারবো। যাদের পক্ষে সম্ভব সহযোগিতা করা, তারা জানাবেন।’
জয়া আহসান ‘প্রাণীCool’ পেইজের একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। সেখানে চিতাবাঘ কীভাবে মেরে ফেলা তার উল্লেখ আছে। সেখানে লেখা- ‘আপনি কি জানেন, গত ১৪ বছরে দেশে প্রায় ১০টি বাঘ পিটিয়ে মারা হয়েছে! ওদের অপরাধ একটাই, বন ছেড়ে ওরা চলে এসেছিল লোকালয়ে। চিতাবাঘ আমাদের দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিড়ালজাতীয় প্রাণী। একসময় পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারীর বনাঞ্চলে অনেক চিতাবাঘ দেখা যেত। কিন্তু আজ এই প্রাণীটি দেশ থেকে হারিয়ে যাওয়ার পথে। আমাদের পাশের দেশ ভারতের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার আর আলিপুরদুয়ারে বেশ কিছু চিতাবাঘ মানুষের সাথেই স্বাচ্ছন্দে বাস করে। এসব এলাকায় মানুষের হাতে চিতাবাঘ মরার খবর খুবই কম পাওয়া যায়।
তাহলে কেন আমাদের দেশে লোকালয়ে চিতাবাঘ দেখলেই পেটানো হয়, পানিতে চুবিয়ে মারা হয়? ওরা তো শখ করে লোকালয়ে আসে না। খাবারের অভাবে পড়েই ওরা আসে। ওদের বাসস্থান আর খাবার তো আমরাই ধ্বংস করে চলছি দিনের পর দিন ধরে। এক্ষেত্রে আমাদের একটু সচেতনতাই পারে এই প্রাণীটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে। কোনো কারণে লোকালয়ে চিতাবাঘ চলে এলে ভয় না পেয়ে যদি আমরা বনবিভাগে খবর দিই, তাহলেই বাঘগুলো বেঁচে যাবে। কর্তৃপক্ষ ওদের ফিরিয়ে দেবে জঙ্গলে। আসুন, সচেতন হই। বিরল এই চিতাবাঘদের রক্ষা করি ।’