পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর এই প্রথম জনসমক্ষে বক্তব্য দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মোদি বলেছেন, ভারতের আক্রমণে দিশাহারা হয়ে পাকিস্তান বাঁচার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছে। শেষ পর্যন্ত ভারতের সামরিক বাহিনীর (ডিজিএমও) শরণাপন্ন হয়ে যুদ্ধ থামাতে অনুরোধ করে। ভারত সাময়িকভাবে সেই অনুরোধ মেনে নিয়ে প্রত্যাঘাত স্থগিত রেখেছে। সোমবার (১২ মে) রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে মোদি বলেন, পাকিস্তানের অনুরোধে ভারত প্রত্যাঘাত স্থগিত রেখেছে শুধু। এ সময়ে ‘সন্ত্রাসবাদীদের’ প্রতি পাকিস্তানের আচরণ লক্ষ করা হবে। ‘সন্ত্রাসবাদে’ পাকিস্তানের মদদ বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে আবার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। এ সময় পারমাণবিক অস্ত্রের তোয়াক্কাও করা হবে না এবং ‘নিউক্লিয়ার ব্ল্যাকমেল’ও সহ্য করা হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ভারত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে— এমন বক্তব্য নাকচ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতকে সঙ্গ না দিয়ে পাকিস্তান ভুল করেছে। তারা উল্টো ভারতের স্কুল, হাসপাতাল, সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি, উপাসনালয়ে হামলা চালিয়েছে, সেখানেও ব্যর্থ তারা। তাদের ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন আকাশেই অকেজো করে দেওয়া হয়েছে।
ভারতের পুরোনো নীতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাস ও বাণিজ্য একসঙ্গে চলতে পারে না। রক্ত ও পানি একসঙ্গে বইতে পারে না। ভবিষ্যতে পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো আলোচনা হলে তা হবে সন্ত্রাসবাদ দমন নিয়ে। আলোচনা হলে তা হবে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ফেরত পাওয়া নিয়ে।’
এটি যেমন যুদ্ধের যুগ নয়, তেমনই সন্ত্রাসবাদের যুগও নয় উল্লেখ করে মোদি বলেন, ‘পাকিস্তান সরকার ও পাকিস্তান সেনাবাহিনী যেভাবে সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়ে চলছে, তাতে একদিন তারা নিজেরাই শেষ হয়ে যাবে। তাদের বুঝতে হবে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তারা যদি লড়তে না পারে, তাহলে শান্তিতে থাকতে পারবে না।’
গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ।