লক্ষ্মীপুরে একটি মাদরাসায় সাত বছরের হাফেজি বিভাগের সানমি হোসাইন নামক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদর উপজেলার উত্তর তেমুহনী এলাকায় অবস্থিত ‘আল-মুঈন ইসলামি একাডেমি’ থেকে সানমির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিবার বলছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। এদিকে একাধিক সহপাঠী জানায়, ঘটনার দিন সকালে শিক্ষক মাহমুদুর রহমান সানমিকে মারধর করেছিলেন।
নিহত সানমি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের কুচিয়ামারা গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী হুমায়ুন মাতব্বরের ছেলে। পরিবারের অভিযোগ, শিক্ষক মাহমুদুর রহমানের মারধরের কারণেই শিশুটি মারা গেছে। ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজে অসঙ্গতি ধরা পড়ায় শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
মাদরাসা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, সানমি টয়লেটে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তৃতীয় তলার টয়লেট থেকে সানমির মরদেহ নিচে নামিয়ে আনা হলেও, সে সময়কার কোনো ভিডিও বা দৃশ্য কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেনি। এমনকি মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বশরি আহমদও ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি।
নিহতের পরিবার বলছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। সানমির ফুফাতো ভাই বকশি মো. শাহদি হোসাইন জানান, সানমি ২০ পারা হাফেজ। কয়েক দিন আগে জানতে পারি, সে নাকি হুজুরের কথা শোনে না—এমন অভিযোগে শিক্ষক তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে খবর পাই, সে টয়লেটে গলায় ফাঁস দিয়েছে। কিন্তু মাদরাসায় গিয়ে দেখি, তার মরদেহ একটি কক্ষে খাটের ওপর পড়ে আছে। এটা আত্মহত্যা নয়, খুন করা হয়েছে।
এদিকে একাধিক সহপাঠী জানায়, ঘটনার দিন সকালে শিক্ষক মাহমুদুর রহমান সানমিকে মারধর করেছিলেন। তবে মৃত্যুর কারণ তারা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রজাউল হক জানান, প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। তবে মরদেহে গলা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কালো দাগ রয়েছে। তাই আমরা সন্দেহ দূর করতে শিক্ষক মাহমুদুর রহমানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।