ভাঙ্গায় রাতের অন্ধকারে যুবক কোপানোর ঘটনায় নিহত বেড়ে ২

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ ঘন্টা আগে
প্রতীকী ছবি

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় রাতের অন্ধকারে তিন যুবককে কুপিয়ে জখম করার ঘটনার তিন দিন পর মঙ্গলবার (১৩ মে) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রায়হান শেখ (২৪) নামে আহত আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। রায়হান শেখ ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের থানমাত্তা গ্রামের কৃষক ফখরুদ্দিন শেখের ছেলে।

এর আগে ঘটনার দিন গত শনিবার (১০ মে) রাত ১টার দিকে এ ঘটনায় গুরুতর আহতদের ভাঙ্গা থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে ইয়াছিন খালাসী (১৯) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। এতে এ ঘটনায় তিনদিনে ২ জনের মৃত্যু হলো।

শনিবার রাতে নিহত ইয়াছিন খালাসী ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের থানমাত্তা গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর খালাসীর ছেলে।

এ ঘটনায় গত রবিবার (১১ মে) নিহত ইয়াছিন খালাসীর বাবা জাহাঙ্গীর খালাসী বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মো. ইসমাইল বেপারীকে (১৮) সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার শিরোইল বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১০-এর একটি দল।

র‍্যাব-১০-এর অধিনায়কের পক্ষে সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ও সহকারী পুলিশ সুপার শামীম হাসান সরদার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ভাঙ্গার আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামের ইয়াছিন খালাসীকে কুপিয়ে নাড়িভুঁড়ি বের করে দেয় প্রতিপক্ষ।

হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাদের সহযোগিতা চায়। আমাদের দল গোপন সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় রাজশাহী থেকে এ হত্যার ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত ইসমাইল বেপারীকে (১৮) গ্রেপ্তার করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষ রয়েছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন থানমাত্তা গ্রামের ভুলু খন্দকার (৬৮) ও অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন একই গ্রামের বাদশা শরীফ (৬৩)। এ দুই পক্ষের মধ্যে অতীতে বিভিন্ন সময়ে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। নিহত ইয়াছিন খালাসীর পিতা জাহাঙ্গীর খালাসী ভুলু খন্দকারের পক্ষের লোক। পরিবারের অভিযোগ প্রতিপক্ষই এ হত্যার জন্য দায়ী।

গত শনিবার রাত ১০টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামের খালের ব্রিজের উপর বসে গল্প করছিলেন থানমাত্তা গ্রামের জাহাঙ্গীর খালাসীর ছেলে ইয়াসিন খালাসী, একই গ্রামের ফখরুদ্দিন শেখের ছেলে রায়হান শেখ ও এলাকায় বেড়াতে আসা মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার মাঝিকান্দা কাশিমপুর গ্রামের বাবুল মাতুব্বরের ছেলে শাকিব মাতুব্বর (১৬)।

এ সময় ৭-৮ জন তরুণ ও কিশোর ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে হঠাৎ ইয়াসিনসহ তিনজনকেই এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের তিনজনকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। রোগীদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য রওনা হন রোগীর স্বজনরা। ঢাকা নেওয়ার সময় পথে ইয়াছিনের মৃত্যু হয়।

নিহত ইয়াছিনের বাবা জাহাঙ্গীর খালাসী বলেন, বাদশা শরীফের নির্দেশেই তার ছেলের নেতৃত্বে কিশোরগ্যাং আমার ছেলেসহ তিনজনকে কুপিয়ে নাড়িভুঁড়ি বের করে দেয়। এর মধ্যে আমার ছেলেসহ দুইজন মারা গেল। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, শনিবার রাতে তিনজনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় মঙ্গলবার রায়হান শেখ নামে আরো একজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছে। এ ঘটনায় গত রবিবার ইয়াছিনের বাবা জাহাঙ্গীর খালাসী বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। পূর্বশত্রুতার জের ও আধিপত্যের বিরোধে দুই জনের হত্যার ঘটনা ঘটল।

  • নিহত
  • ভাঙ্গা
  • #