চট্টগ্রামে ২৬ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা : সিইউজের উদ্বেগ

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৫ দিন আগে

চট্টগ্রামে ২৬ জন সাংবাদিকসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। মামলায় ৭০ থেকে ৮০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে। বিএনপিপন্থি আইনজীবী রেজাউল ইসলাম গত মঙ্গলবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে সিইউজে এ ব্যাপারে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সাংবাদিক নেতারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।

মামলার আসামি হওয়া সাংবাদিকরা হলেন-চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ, যুগ্ম সম্পাদক ওমর ফারুক, দৈনিক সমকালের প্রতিবেদক আবদুল্লাহ আল মামুন, দৈনিক আমদের সময়ের চট্টগ্রাম ব্যুরো ইনচার্জ হামিদ উল্লাহ, চ্যানেল ২৪ এর রিপোর্টার রনি দত্ত, ক্যামেরাম্যান শফিক আহমেদ সজিব, যুগান্তর চট্টগ্রামের ব্যুরো প্রধান শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার ও ফটোসাংবাদিক রাজেশ চক্রবর্তী, প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিক জুয়েল শীল, কালবেলার চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সাইদুল ইসলাম, যায়যায়দিন এর রিপোর্টার খোরশেদ আলম শামীম, দৈনিক আজাদী রিপোর্টার শুকলাল দাস, নিউজনাউ এর সাংবাদিক পার্থপ্রতিম নন্দী, চট্টগ্রাম প্রতিদিন এর সম্পাদক হোসেন তওফিক ইফতেখার, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদক উত্তম সেন গুপ্ত, ঢাকাপোস্ট ডটকমের প্রতিবেদক মিজানুর রহমান মিজান, পূর্বদেশের সাব-এডিটর শফিকুল ইসলাম এবং অন্যান্যরা হলেন-প্রদীপ শীল, উজ্জ্বল কান্তি ধর, কমল দাস, রঞ্জিত কুমার শীল, বিশু রায় চৌধুরী, রাহুল রায় চৌধুরী, রাহুল দাস ও রঞ্জিত কুমার শীল। অন্য ১১ জন অভিযুক্তকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসী’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে অভিযোগকারী নিজেকে বিএনপি-সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম (চট্টগ্রাম ইউনিট), ইউনাইটেড লয়ার্স ফ্রন্ট এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলার বিএনপির আইনি কমিটির সক্রিয় সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।

রেজাউল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, অভিযুক্তরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং সহযোগী সংগঠনের সাথে জড়িত। তার দাবি আসামিরা গত বছরের জুলাইয়ের বিদ্রোহের সময় বিক্ষোভকারীদের উপর আক্রমণ করেছিলেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, মে দিবসে জামিয়াতুল ফালাহ মসজিদের কাছে শ্রমিক দলের একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে আসামিরা বাদীকে আক্রমণ করে, কারণ তিনি জুলাই আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করেছিলেন।

এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, ‘আক্রমণকারীরা তাকে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে এবং তার কাছ থেকে ৩০,০০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। আক্রমণের সময় ককটেল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল, যার ফলে তার একটি চোখ আহত হয়েছে। পরে তিনি একটি টহলরত পুলিশ দলের আশ্রয় নেন এবং পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’

রেজাউলের ​​আইনজীবী ইমতিয়াজ রেজা চৌধুরীর সাথে একাধিক যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিকদের মামলার বাদী রেজাউল ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়েরের বিষয়ে আমি অবগত নই।’ তবে তিনি রেজাউলকে বিএনপি কর্মী হিসেবে নিশ্চিত করেছেন।

এক বিবৃতিতে, সিইউজে সভাপতি রিয়াজ হায়দার এবং সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, ৩০ এপ্রিল রেজাউল একটি ফেসবুক পোস্ট দিয়েছিলেন; তিনি ১ মে সাংবাদিকদের সমাবেশকে ব্যর্থ করবেন। পরে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের কাছে কিছু অপরাধী সাংবাদিকদের উপর হামলা চালায়। এতে অন্তত তিনজন আহত হন।

বিবৃতিতে বলা হয়, আসল ঘটনা গোপন করে ২৭ জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং সিইউজে এ ব্যাপারে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সাংবাদিক নেতারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।

  • উদ্বেগ
  • চট্টগ্রাম
  • মামলা
  • সাংবাদিক
  • সিইউজে
  • হত্যাচেষ্টা
  • #