বন্দর-করিডর আপনার এখতিয়ারে নেই, বিদেশি উপদেষ্টাকে বিদায় করুন : ইউনূসকে সালাহউদ্দিন

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ ঘন্টা আগে

দেশের বন্দর পরিচালনার ভার বিদেশিদের হস্তান্তর এবং রাখাইনের জন্য মানবিক করিডর দেওয়ার এখতিয়ার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের নেই এবং  এর  তীব্র সমালোচনা করে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বিদেশি নাগরিক খলিলুর রহমানকে অপসারণের দাবি জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। 

তিনি  বলেন, ‘এই দেশের বন্দর, করিডর—সবকিছু নাকি ইউনূস সরকারের অধিকারের মধ্যে পড়ে। বিদেশে আপনি কী কণ্ঠে আরজি করে এসেছেন, জানি না। আপনি অবলীলাক্রমে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর, নদীবন্দর, করিডর—সব বিদেশিদের হাতে হস্তান্তর করবেন। কী চুক্তি করে এসেছেন? কী এখতিয়ার আছে আপনার? কী ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছেন! আপনার একমাত্র ম্যান্ডেট—বাংলাদেশে একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন করা।’

আজ শনিবার বিকেলে খুলনার সার্কিট হাউস ময়দানে খুলনা ও বরিশাল বিভাগীয় ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ প্রধান অতিথির তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল— যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে। খুলনা, বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ছাড়াও গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্র-যুব ও স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিনিধিরা সমাবেশে যোগ দেন।

ড. ইউনূসকে ইঙ্গিত করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আপনার সরকারে একজন বিদেশি নাগরিককে আপনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করেছেন। আপনার কি সেই আক্কেল-জ্ঞান নাই। একজন বিদেশি নাগরিকের কাছে এই দেশের সেনাবাহিনী নিরাপত্তাসংক্রান্ত রিপোর্ট প্রদান করবে—কীভাবে ভাবলেন? আপনি রোহিঙ্গা করিডরের নামে, মানবিক করিডরের নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে চান। বাংলাদেশের মানুষের সাথে আপনি কথা বলেননি। এ দেশের রাজনৈতিক দলসমূহের সাথে কোনো আলাপ-আলোচনা করেননি। অত্যন্ত অ্যারোগেন্টলি আপনার সেই উপদেষ্টা বলেছে, তাতে কিছু যায় আসে না।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই জনসভা থেকে দাবি করছি, সেই উপদেষ্টাকে আপনি বিদায় করুন। সেই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হয় নিজে পদত্যাগ করবেন, না হয় আপনি তাঁকে বিদায় করবেন। এ দেশের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত কোনো জাতীয় দায়িত্ব বিদেশি নাগরিকের কাছে থাকতে পারে না। এই নাগরিক ষড়যন্ত্র করছে যে বাংলাদেশ একটি অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য। আমরা তা হতে দেব না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘ আপনার সরকার, এখন মানুষ বলছে এনসিপি মার্কা সরকার। আপনার সরকারে এনসিপির দুজন প্রতিনিধি বিদ্যমান। তাঁরা উপদেষ্টা, তাঁরা আবার এনসিপির সংগঠন করে, অফিশিয়ালি করে না। কিন্তু সবাই সবকিছু জানে। ওপেন-সিক্রেট! যদি আপনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে চান— তাহলে সেই এনসিপি মার্কা দুজন উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলুন। যদি পদত্যাগ না করে আপনি বিদায় করুন।’

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ইতিমধ্যে কিছু কিছু উপদেষ্টা আপনার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করে উচ্চাভিলাষ প্রকাশ করছে। তাদের উদ্দেশ্য, অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত যেন অনির্বাচিত এই সরকার থাকতে পারে। আপনার কী উদ্দেশ্য, অবশ্য আমরা জানি না। যদি কোনো দিন নির্বাচনের দাবিতে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘেরাও করতে হয়, তা হবে আমাদের জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। আপনি কী চান—এই নির্বাচনের জন্য আপনার সাথে আমাদের দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হোক। এ দেশের জনগণ সংশয় প্রকাশ করুক। এ দেশের জনগণ যমুনামুখী লংমার্চ করুক। হুঁশিয়ার করে দিতে চাই— প্রফেসর ডক্টর ইউনূস সাহেব! আপনি বিশ্ববরেণ্য। বিচার ও সংস্কারের বাহানা দিয়ে দেশের গণতন্ত্রকে কণ্টকাকীর্ণ করবেন না। যাদের কথায়, যাদের পরামর্শে আপনি বিভ্রান্ত হচ্ছেন। সেই ফ্যাসিবাদের দোসরদের আপনার উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণ করুন।’

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, বিশেষ বক্তা ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুর বারী হেলাল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, জেলা আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান মন্টু এবং নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন।

  • ড. ইউনূস
  • বন্দর-করিডর
  • বিদেশি উপদেষ্টা
  • সালাহউদ্দিন আহমদ
  • #