গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানায় আরও একটি মামলা করা হয়েছে। এ নিয়ে উক্ত ঘটনায় গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় মোট ১১টি মামলা করা হয়েছে। কাশিয়ানী উপজেলার কাশিয়ানীর রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই নাসির উদ্দীন বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় ৩৩৭ জনকে আসামি করে করা হয়েছে।
কাশিয়ানী থানার ওসি কামাল হোসেন মামলার বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলম ও কাশিয়ানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলিসহ (খোকন) ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০০ থেকে ২৫০ নেতাকর্মীকে আসামি করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে এ মামলা করেন এসআই নাসির উদ্দীন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৬ জুলাই (বুধবার) এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা বাসস্ট্যান্ড ও আশপাশ এলাকার রাস্তাঘাট এবং ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করে যানবাহন চলাচল ব্যাহত করে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করতে থাকে। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে এবং এনসিপির সমাবেশকে নস্যাৎ করতে এ ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়। এতে সাধারণ জনগণের ও ভোগান্তি বাড়ে।
সর্বশেষ কাশিয়ানী থানার এই মামলা নিয়ে গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যা ঘটনায় মোট ১১টি মামলা করা হলো। গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো করা হয়।
১১টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৯ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। উক্ত ঘটনায় আসামির সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ালো।
গত ১৬ জুলাই থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৫ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচি শেষ করে গোপালগঞ্জ থেকে মাদারীপুর যাওয়ার পথে তাদের গাড়িবহরে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনগণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। উক্ত সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনার দিন বিকালে প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা প্রশাসক ও ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান। রাতেই জারি করা হয় কারফিউ। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হলেও রবিবার (২০ জুলাই) রাত ৮টা থেকে কারফিউ শিথিল করা হয়।