বাংলাদেশের নারী ফুটবল অনূর্ধ্ব-২০ দল একের পর এক নজির গড়ে জায়গা করে নিচ্ছে এশিয়ার শীর্ষ পর্যায়ে। বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-২০ নারী দল প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল।
গত মাসে জাতীয় নারী দল ‘ঋতুপর্ণা চাকমারা’ প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার সুযোগ পায়। এবার সেই ইতিহাস অনুসরণ করে অনূর্ধ্ব-২০ দল ‘সাগরিকারা’ বাছাই পর্বে সফল হয়ে মূলপর্বের টিকিট নিশ্চিত করলো। এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী টুর্নামেন্টের আটটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও সেরা তিন রানার্স আপ দলের মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয় স্থান অধিকার করে মূলপর্ব নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারণ হয় দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৬-১ গোলে হারার পর, যখন চীনের কাছে লেবানন ৮-০ গোলে হেরে যায়। এর ফলে লেবাননের থেকে ভালো অবস্থান ধরে রেখে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-২০ দল চূড়ান্ত পর্বে উঠার সুনিশ্চিত জায়গা পায়।
দেশের ফুটবল ইতিহাসে পুরুষদের জাতীয় দল ১৯৮০ সালে কুয়েতে প্রথম এশিয়ান কাপে অংশ নেয়। নারী দলের প্রথম উল্লেখযোগ্য অর্জন ২০০৫ সালের অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়ান কাপে অংশগ্রহণ। এরপর ২০১৭ ও ২০১৯ সালে আবারও তারা এশিয়ান কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে মিয়ানমারে প্রথমবার মূল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে জাতীয় নারী দল, যা ছিল এক বিরাট সাফল্য।
এই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে অনূর্ধ্ব-২০ নারী দল দারুণ ছন্দে খেলছে। টানা ১২ ম্যাচ অজেয় থাকার পাশাপাশি ঘরের মাঠে ছয়টি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পর এশিয়ার মঞ্চেও নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে।
অনূর্ধ্ব-২০ দল তাদের বাছাইপর্ব শুরু করেছিল লাওসের বিরুদ্ধে ৩-১ গোলের জয়ে, এরপর পূর্ব তিমুরকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ফর্মকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। দলের অন্যতম তারকা তৃষ্ণা রানী ৪ গোলসহ সর্বোচ্চ স্কোরার, যার মধ্যে একটি হ্যাটট্রিকও রয়েছে। সাগরিকা তিন গোল করেছেন।
আগামী বছর থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ান কাপে যেখানে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভারত, চীনসহ বাংলাদেশের মতো বড় দলগুলো অংশ নেবে। বাংলাদেশ নারী ফুটবল প্রথমবারের মতো এমন মাইলফলক স্পর্শ করায় দেশের ক্রীড়া ইতিহাসে এটি এক গর্বের দিন হিসেবে চিহ্নিত হবে।