বিদেশে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফিরে প্রাণ হারালেন বাবু নামে এক যুবক। এতে নিহতের বাবা ও আরেক ভাই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন। সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জের বড়গাঁও গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। তবে এরই মধ্যে এলাকাবাসী ঘাতক ও তার পরিবারের সদস্যদের আটক করে আটকে রাখে। সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদেরকে উদ্ধার করে।
ওই গ্রামের গাজী বাড়িতে কৃষক রৌশন আলীর ছেলে তার চাচা হাসান গাজী ও তার পরিবারের সদস্যদের হাতে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। ঘাতকরা বাবুর পেটে ধারালো ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় রৌশন আলী (৫০) ও তার আরেক ছেলে আরমান (২০) হামলায় গুরুতর আহত হন। তাদেরকে প্রথমে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশ এরই মধ্যে জনতার সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আটক করে। একপর্যায়ে গণধোলাই দিয়ে আটকে রাখে।
ঘটনার সূত্রপাত বিদেশ থেকে প্রতারিত হয়ে দেশে ফিরেন বাবু। তাকে বিদেশ পাঠান চাচা হাসান। আর সেখানে কাজ না পেয়ে প্রতারিত হওয়ার জন্য দায়ী করা হয় চাচা হাসানকে। এই ঘটনার জেরে সোমবার দু’পক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। পরে ধারালো ছুরি দিয়ে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এমন তথ্য জানান, ওই বাড়ির বাসিন্দা ইবু গাজী।
ওই এলাকায় এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে স্বজন এবং এলাকাবাসী ঘটনার জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
বিকেলে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব। উত্তেজিত জনতাকে আশ্বস্ত করে পরিস্থিতি শান্ত করেন তিনি।
পুলিশ সুপার জানান, বিদেশ থেকে প্রতারিত হওয়ার কারণে চাচা হাসানের সঙ্গে বিরোধ ছিল ভাতিজা বাবু (২৫)। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এই হত্যাকাণ্ডে ঘটে। সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি সদস্য মো. ওবায়দুল্লাহ জানান, গত রবিবারও তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়। আমি মীমাংসা করার চেষ্টা করেছিলাম। তবে আজ সোমবার বিকেলে তাদেরকে নিয়ে সালিস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
এদিকে, জনতা পুলিশের সহায়তায় হত্যায় জড়িতদের আটক করে। তারা হচ্ছেন, ঘাতক হাসান (৫৫), তার ছেলে শাকিল (৩০), শাকিলের স্ত্রী মীম (২০) ও ছোট ভাই রাকিব (১৫)।
অন্যদিকে, সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনাবাহিনী। এসময় উত্তেজিত জনতার কাছ থেকে ঘাতকদের উদ্ধার করে। পরে বিশেষ নিরাপত্তায় তাদেরকে ফরিদগঞ্জ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে রাত ১০টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।