কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থেকে গাড়িসহ ২০ ড্রাম মাছ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বিএনপির প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মজিবুর রহমানের ছেলে মফিজুর রহমান ওরফে সুমনকে (৪৫) আটকের একদিন পর মামলা হয়েছে। সোমবার সকালে ভুক্তভোগী আবু তাহের (৭৫) ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলাটি করেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সকালে মফিজুরকে আদালতের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী জানান, আবু তাহেরের বাড়ি বাজিতপুর উপজেলার শোভারামপুর গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত। নিজের পুকুর থেকে ধরা ২০ ড্রাম পাঙাশ মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে রবিবার ভোরে একটি টমটম গাড়িতে কটিয়াদীর চরিয়াকোনা স্বনির্ভর বাজারে যাচ্ছিলেন। বাজিতপুর বাজার সংলগ্ন একটি সেতুর কাছে পৌঁছালে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে মফিজুর রহমান টমটমের গতিরোধ করেন। তখন চালক ও আবু তাহেরকে নামিয়ে দেওয়া হয়। আবু তাহেরকে নীরব থাকতে সতর্ক করে গাড়ি ও মাছ নিয়ে মফিজুর রহমান স্বনির্ভর বাজারে চলে যান। সকাল ৬টার দিকে আবু তাহেরও বাজারে পৌঁছান। সেখানে গিয়ে তিনি মফিজুর রহমান ও তার সহযোগীদের মাছ বিক্রির প্রস্তুতি নিতে দেখেন। তিনি কটিয়াদী থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মফিজুর রহমানকে আটক করে। তবে তার সহযোগীরা মাছভর্তি টমটম নিয়ে পালিয়ে যায়।
আবু তাহের বলেন, ‘কয়েকজন গাড়ি থামানোর ইশারা দেন। ইশারা পেয়ে গাড়ি থামানো হয়। পরে দেখতে পাই আমাদের সাবেক এমপির ছেলে সঙ্গে রয়েছেন। আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে গাড়িতে ওঠেন তারা এবং আমাকে ধমক দিয়ে চলে যেতে বলেন। পরে গাড়ি নিয়ে চলে যান। মাছ হারানোর পর মনে হলো স্বনির্ভর বাজারে যাই। গিয়ে দেখি তারা মাছ বিক্রির আলোচনা করছেন। মূল অভিযুক্ত মফিজুর রহমান। তাকে পুলিশ আটক করলেও আমি আমার মাছ ফিরে পাইনি। তার সহযোগীদের এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।’
কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘মফিজুর রহমানকে মাছ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আমরা আটক করি। যেহেতু ঘটনাস্থল বাজিতপুর থানা এলাকায়, সে কারণে অভিযুক্তকে বাজিতপুর থানা পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়।’
বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর মফিজুরকে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘মাছ লুটের অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমানের ছেলে মফিজুর রহমান আটক হয়েছেন বলে শুনেছি। তবে মফিজুর বিএনপি কিংবা অঙ্গসংগঠনের কোনও পদে নেই।’