ভারত-চীন সরাসরি ফ্লাইট চালু হচ্ছে। এছাড়া বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহ বাড়ানোর বিষয়েও একমত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ অর্থনীতির দুই দেশমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অপ্রতিরোধ্য বৈদেশিক নীতির কারণে প্রতিবেশী দুই দেশ তাদের সম্পর্ক উন্নতির চেষ্টা করছে।
২০২০ সালের কোভিড-১৯ মহামারির পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পরিষেবা বন্ধ ছিল। যদিও ফ্লাইট চালুর কোনো নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি, তবে ভারত সরকার জানিয়েছে, উভয় দেশ সীমান্ত বাণিজ্য আবার চালু করতে এবং ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করতে সম্মত হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের নয়াদিল্লি সফর শেষে। এটি ছিল সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ভারতীয় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভালের সঙ্গে তাঁর ২৪তম বৈঠকের ধারাবাহিকতা। বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সীমান্তে উভয় দেশের জমায়েত হওয়া সেনাদের সরিয়ে নেওয়া, নতুন করে সীমান্ত চিহ্নিতকরণ এবং সীমান্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সীমান্ত চিহ্নিতকরণ আলোচনার জন্য উভয় দেশ একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করতে সম্মত হয়েছে। এই বিশেষজ্ঞ কমিটি সীমান্তের পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চল নিয়ে আলোচনা করবে। একই সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চল নিয়ে আরেকটি বৈঠক যত দ্রুত সম্ভব অনুষ্ঠিত হবে। দুই দেশ ২০২৬ সালে চীনে আবারও বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের একটি পোস্টে বলেন, ‘ভারত-চীন স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রেখে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি-সমৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।’ আগামী মাসের শেষে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে মোদি চীন সফর করবেন, যা সাত বছরের মধ্যে তাঁর প্রথম চীন সফর।
বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইকে জানান, তিব্বতে ইয়ারলুং সাংপো নদীর (ব্রহ্মপুত্র নদ) ওপর চীনের বৃহৎ বাঁধ নির্মাণ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ রয়েছে। ইয়ারলুং সাংপো নদীটি ভারতে প্রবেশ করার পর ব্রহ্মপুত্র নামে পরিচিত। এটি ভারত ও বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের জীবনরেখা বিবেচিত হয়।
নয়াদিল্লি জোর দিয়ে বলেছে, এই বাঁধের ফলে ভাটি অঞ্চলের দেশগুলোর ওপর এর প্রভাব পড়বে। এ বিষয়ে ‘সর্বোচ্চ সতর্কতা’ প্রয়োজন। জবাবে চীন মানবিক নীতিমালার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট নদীগুলোর জরুরি জল-সংক্রান্ত তথ্য ভারতের সঙ্গে ভাগ করে নিতে রাজি হয়েছে। এ ছাড়া উভয় পক্ষ আন্তসীমান্ত নদীগুলো নিয়ে কাজ করার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের প্রক্রিয়া চালু এবং বন্যা সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ের জন্য যোগাযোগ বজায় রাখতেও সম্মত হয়েছে।