গাজা সিটি ও আশপাশের এলাকায় পুরোদমে দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস একে ‘মানবসৃষ্ট বিপর্যয়’ ও ‘মানবতার ব্যর্থতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। জাতিসংঘের সহায়তায় কাজ করা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, বর্তমানে গাজায় ৫ লাখের বেশি মানুষ অনাহার ও মৃত্যুর মুখে পড়েছে। পরিস্থিতি সর্বোচ্চ ধাপ ফেজ-৫-এ পৌঁছেছে।
আইপিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজাজুড়ে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ ‘অনাহার, তীব্র অপুষ্টি ও মৃত্যু’র মুখোমুখি। তবে ইসরায়েল এই রিপোর্টকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং গাজায় দুর্ভিক্ষের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তবে শতাধিক মানবিক সংস্থা, প্রত্যক্ষদর্শী এবং যুক্তরাজ্যের মতো কিছু মিত্রদেশও ইসরায়েলের এই দাবির সরাসরি বিরোধিতা করেছে।
গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অপুষ্টিতে অন্তত ২৭২ জন মানুষ মারা গেছে, যার মধ্যে ১১২ জন শিশু। আইপিসি সতর্কবার্তা, যদি জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তবে দুর্ভিক্ষের কারণে মৃত্যু আরও বেড়ে যাবে। আইপিসি পূর্বাভাস দিয়েছে, আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দুর্ভিক্ষ দেইর আল-বালাহ এবং খান ইউনিস পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ৬ লাখ ৪১ হাজার মানুষ আইপিসির ফেজ-৫-এর মুখোমুখি হবে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার বলেছেন, এই দুর্ভিক্ষ সম্পূর্ণভাবে ঠেকানো সম্ভব ছিল, কিন্তু ইসরায়েলের ‘পরিকল্পিত বাধা’র কারণে ফিলিস্তিনে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো যায়নি। একই কথা বলেছেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক।