কিশোরগঞ্জ শহরের আলোচিত পাগলা মসজিদের ১৩টি দানবাক্স এবার খোলা হয়েছে চার মাস ১৮দিন পর। পাওয়া গেছে ৩২ বস্তা টাকা। মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মো. হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয় আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায়। এরপর বস্তাগুলো মসজিদের দোতলায় নিয়ে গণনা শুরু করা হয়।
এর আগে ১২ এপ্রিল ১১টি দানবাক্সের ২৮ বস্তা টাকা গণনা করে পাওয়া গিয়েছিল এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। পাওয়া গিয়েছিল বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও সোনা-রূপার অলঙ্কার। অনেকের মনোবাঞ্ছা পূরণের আকুতি পেশ করার চিরকুটও পাওয়া গিয়েছিল। এবারও তাই পাওয়া গেছে। তবে এবার টাকার পরিমাণ আরও বেশি হবে বলে মসজিদ কর্তৃপক্ষ করছেন। এ ছাড়া ৪ জুলাই থেকে দূর-দূরান্তের ভক্তদের জন্য চালু করা হয়েছে ডোনেশন ওয়েবসাইট।
জেলা প্রশাসক জানান, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শুক্রবার পর্যন্ত পাওয়া গেছে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। দানবাক্স ও ওয়েবসাইটের এসব টাকা রূপালী ব্যাংকে মসজিদের হিসাবে জমা রাখা হয়। জনগণের দাবি অনুযায়ী অনুদানের জন্য একটি বাংলা ওয়েবসাইটও খোলা হবে বলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন।
দু’টি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও রূপালী ব্যাংকের স্টাফসহ মোট ৪১০ জন মানুষ টাকা গণনায় অংশ নিয়েছেন। তারা টাকাগুলো মুদ্রামান অনুযায়ী আলাদা করছেন। আর সেগুলো ব্যাংকের কাউন্টিং মেশিনে গণনা করে ১০০টির পৃথক বান্ডেল বাঁধা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেছেন, প্রতি তিন মাস অন্তর দানবাক্স খোলার নিয়ম থাকলেও এবার এইচএসসি পরীক্ষারসহ নানা কারণে দানবাক্স খোলা হল চার মাস ১৮ দিন পর। দানবাক্সের বাইরেও মানতকারীরা বিভিন্ন জাতের গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি, কবুতর, দুধ এবং সবজিও দান করে থাকেন। এগুলো প্রতিদিন বিকেলে উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি করে মসজিদের ব্যাংক হিসাবে জমা রাখা হয়।
এখন পর্যন্ত মসজিদের ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৯১ কোটি টাকা জমা আছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তিনি বলেন, পাগলা মসজিদের সাড়ে ৫ একর জায়গা আছে। আরও জায়গা কেনা হবে। এখানে একটি ১০ তলা মাল্টিপারপাস মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। এর জন্য বুয়েটের একটি বিশেষজ্ঞ দলকে ডিজাইন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।