২০০২ সালে বুয়েট শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুশফিক উদ্দিন টগর (৫০) এবার অস্ত্র ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। কারাগার থেকে মুক্তির পর থেকেই তিনি সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অস্ত্র এনে ঢাকায় সরবরাহ করেন।
এমন দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর লালবাগ থানাধীন আজিমপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে টগরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন আজ শুক্রবার দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানান, সনি হত্যা মামলায় দীর্ঘ কারাভোগ শেষে ২০২০ সালে মুক্তি পান টগর। মুক্তির পর থেকেই তিনি সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অস্ত্র এনে ঢাকায় সরবরাহ করে আসছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় টগরের কাছ থেকে একটি রিভলবার, একটি ম্যাগাজিন, ১৫৬ রাউন্ড গুলি ও দুটি মুখোশ উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, কার কাছে এসব অস্ত্র সরবরাহ করতেন তা এখনো জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ ছাড়া টগরের নামে একটি মাদক মামলাও রয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, উদ্ধার হওয়া মুখোশ সম্ভবত পরিচয় গোপন ও আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহার করতেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ৮ জুন বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রাসায়নিক কৌশল বিভাগের ১৯৯৯ ব্যাচের ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনি। দরপত্রকে কেন্দ্র করে ওই সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা মোকাম্মেল হায়াত খান ও মুশফিক উদ্দিন টগর গ্রুপ মুখোমুখি হয়। ক্লাস শেষে হলে ফেরার পথে সংঘর্ষের মাঝে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন সনি।
ঘটনার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরের বছর ২০০৩ সালের ২৯ জুন ঢাকার বিচারিক আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে টগর, মোকাম্মেল হায়াত খান ও নুরুল ইসলাম সাগরকে মৃত্যুদণ্ড এবং আরও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে ২০০৬ সালের ১০ মার্চ উচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন এবং যাবজ্জীবন পাওয়া দুই আসামিকে খালাস দেন। বর্তমানে দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের মধ্যে চারজন কারাগারে আছেন।