খাইবার পাখতুনখাওয়ায় পাকিস্তান বিমান বাহিনীর অভিযানে নিহত ২০, দাবি পিটিআইয়ের

: বিশ্বপরিস্থিতি ডেস্ক
প্রকাশ: ১ সপ্তাহ আগে

পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়ার একটি গ্রামে দেশটির সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৩০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। গত রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে এই হামলা চালানো হয়। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের তিরাহ উপত্যকার মাতরে দারা গ্রামে ৮টি বোমা দিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এই হামলার অভিযোগ করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পিটিআইয়ের খাইবার পাখতুনখাওয়া শাখা বলছে, ‘খাইবার প্রদেশের তিরাপ উপত্যকায় হামলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর বেশ কিছু বোমা পড়েছে। স্থানীয় নাগরিকদের পাঁচটি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, ধ্বংসস্তূপ থেকে এ পর্যন্ত ২০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু ও নারী রয়েছে। এই দুঃখ ও কষ্ট প্রকাশ করার মতো কোনো ভাষা আমাদের নেই। কখনো ড্রোন, আবার কখনো বোমা হামলা–এত বেশি ঘৃণার বীজ বপন করেছে যে, যখন এই লাভা বিস্ফোরিত হবে, তখন আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।’

এই ঘটনার ব্যাপারে ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন ওই জেলার এমপি ইকবাল আফ্রিদি। তিনিও হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন।

এনডিটিভি, দ্য প্রিন্ট, দ্য হিন্দু ও টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এই হামলার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এসব প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, হামলায় অন্তত ৩০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পাকিস্তান সরকার কিংবা দেশটির বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করা হয়নি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট বলছে, এই হামলায় পাকিস্তান বিমান বাহিনীর (পিএএফ) জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়। অন্তত আটটি চীনা নির্মিত এলএস-৬ স্যাটেলাইট-নির্দেশিত গ্লাইড বোমা ফেলা হয়। বোমাগুলো আবাসিক এলাকায় আঘাত হানে, এতে অনেক বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে যায়। নিহত ৩০ জনের অধিকাংশই নারী ও শিশু। হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন। স্থানীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল এবং উদ্ধারকাজে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র এবং সংবাদ সংস্থা আমু টিভি ও খামা প্রেসও এই তথ্য জানিয়েছে।

গত দুই দশক ধরে খাইবার পাখতুনখাওয়া অঞ্চলে পাকিস্তান প্রায়ই সামরিক অভিযান চালিয়ে থাকে। তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি), ইসলামিক স্টেট খোরাসান প্রভিন্স (আইএসকেপি) এবং আল-কায়েদা-সংশ্লিষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীর উপস্থিতির কারণে সরকার প্রায়ই এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান চালায় বলে জানা যায়।

চলতি বছরের মার্চ মাসে একই প্রদেশে এক সামরিক অভিযানে ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এ ছাড়া সম্প্রতি একটি ড্রোন হামলায় ৯ জন রাখাল নিহত হয়েছিলেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের অভিযানে বেসামরিক নাগরিকদের ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করে আসছে।

গত জুলাই মাসে তিরাহ উপত্যকায় মর্টার হামলায় এক শিশুসহ বেশ কিছু বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর বিক্ষোভ হয়েছিল। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, জঙ্গি হামলায় বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

  • অভিযান
  • খাইবার পাখতুনখাওয়া
  • নিহত
  • পাকিস্তান বিমান বাহিনী
  • পিটিআই
  • #