‘পাড়ায় ধইর‍্যা মাইর‍্যা ফেলব’— সাংবাদিককে শ্রমিক দল ও যুবদল নেতার হুমকি

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ২ দিন আগে

ফরিদপুরের সালথায় এক সাংবাদিকের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন দোকানঘর নিয়ে ভাড়াটিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে সালিসে ওই সাংবাদিককে গালিগালাজসহ প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়েছে। এমন অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কালাম বিশ্বাস ও যুবদল নেতা পরিচয়ধারী বালাম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। একটি ভিডিওতে তাঁদের মধ্যে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘সাংবাদিক হইছিস দেইখ্যা কি … হয়ে গেছিস। পাড়ায় ধইর‍্যা মাইর‍্যা ফেলব।’

গতকাল শনিবার বিকেলে সালথা উপজেলা সদর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সাংবাদিক দৈনিক যুগান্তরের উপজেলা প্রতিনিধি ও সালথা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ, এ দুই নেতা সালিসে এসে দোকানঘরটি দখলে নিতে ভাড়াটিয়ার পক্ষে প্রভাব বিস্তার করেন।

শফিকুল ইসলাম জানান, সালথা বাজারের বটতলায় তাঁর একটি দোকানঘর চার বছরের চুক্তিতে ভাড়া নেন লিয়াকত মোল্লা (৩৩) নামে এক যুবক। এখন নিজেরা ব্যবসা করবেন বিধায় এক বছরের মাথায়ই ভাড়াটিয়াকে দোকান ছেড়ে দেওয়ার জন্য মৌখিকভাবে জানান। পরে তাঁকে তিন মাসের নোটিশও দেওয়া হয়। লিয়াকত মোল্লা দোকান ছাড়বেন না বলে জানালে এদিন সালথা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেন বাচ্চুর অফিসে বিষয়টি নিয়ে সালিস বসে। ওই সালিসের একপর্যায়ে জামাল ওরফে বালাম বিশ্বাস (৩০), কালাম বিশ্বাস (৪০), দেলোয়ার মাতুব্বর (৪০), সোহরাপসহ (৩০) আরও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে হুমকি দিয়ে যান।

এ ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর ভিডিওতে যুবদল নেতা পরিচয়ধারী বালাম বিশ্বাসকে বলতে শোনা যায়—‘সাংবাদিক হইছিস দেইখ্যা … হয়ে গেছিস নাকি, তুই এই বাজারের ব্যবসায়ী নাকি, এই চোরের বাচ্চা চোর, পাড়ায় ধইর‍্যা মাইর‍্যা ফেলব।’ একপর্যায়ে শ্রমিক দলের সভাপতি কালাম বিশ্বাসও তেড়ে এসে মারধরের চেষ্টা করেন শফিকুল ইসলামসহ তাঁর বড় ভাই মো. রেজাউল করিমকে (৩৫)। পরে সালিস বৈঠক পরিত্যাগ করে চলে যান।

বিষয়টি নিয়ে বালাম বিশ্বাসের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া জানা যায়নি। তবে বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, ‘ভাড়াটিয়ার সঙ্গে চার বছরের চুক্তি ছিল, এক বছরের মধ্যেই দোকান ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ নিয়ে সালিসে ভাড়াটিয়ার সম্পর্কের মানুষ কালাম ও বালাম উপস্থিত ছিল, একপর্যায়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। তবে এ ধরনের আচরণের জন্য আমিও দুঃখিত। বিষয়টি নিয়ে রাতেই মীমাংসা করে ফেলছি।’

এদিকে এমন ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ও হুমকিদাতাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘কালাম বিশ্বাস আগে সালথা উপজেলা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি ছিলেন। আর বালাম নিজেকে যুবদল নেতা দাবি করে থানার দালালি ও সালিস বাণিজ্য করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। আজকেও তাঁরা টাকার বিনিময়ে সালিশে এসে এমন আচরণ করেছেন।’

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। কিন্তু থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র : আজকের পত্রিকা

  • যুবদল নেতা
  • শ্রমিক দল
  • সাংবাদিক
  • হুমকি
  • #