পুকুর নিয়ে বিরোধে যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ ঘন্টা আগে
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার কাহালুতে বিরোধপূর্ণ পুকুরে মাছ ধরার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন সোহেব সরকার রাহুল (২৮) নামে যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের মাগুড়া উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।স্বজনদের দাবি ওয়াকফ স্টেটের পুকুর নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

জেলার নন্দীগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নুরুজ্জামান চৌধুরী জানান, তাৎক্ষণিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ, স্বজন ও গ্রামবাসী জানান, বগুড়া শহর যুবদলের ১৩নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি সোহেব সরকার রাহুল বগুড়ার সুলতানগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও শাজাহানপুর উপজেলার কৈগাড়ি গ্রামের আবদুস সোবাহান সরকারের ছেলে।

কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের মাগুড়া উত্তরপাড়া গ্রামে জোড়া ওয়াকফ্ স্টেটের জমিতে পুকুর আছে। পুকুরটি দীর্ঘদিন কাহালু সদরের পাল্লাপাড়া গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা জামিলের দখলে ছিল। তিনি ওই পুকুরে মাছচাষ করতেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জামিল আত্মগোপনে যান। এরপর সোহেব সরকার রাহুল গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে পুকুরটি দখলে নিয়ে সেখানে মাছচাষ করে আসছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে সোহেব সরকার রাহুল ওই গ্রামে এসে হুইল বরশি দিয়ে পুকুরে মাছ ধরছিলেন। এ সময় বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত ১০-১৫ জনের একদল সন্ত্রাসী সেখানে আসে। তারা রাহুলের ওপর হামলা চালায়।

তিনি আত্মরক্ষার জন্য পাশেই একটি ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে পড়েন। সেখানে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা ও গ্রামবাসীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দেয়।

নিহতের চাচা আবদুস সালাম সরকার জানান, কাহালুর মালঞ্চা ইউনিয়নের মাগুড়া উত্তরপাড়া গ্রামে তাদের সম্পত্তি আছে। জোড়া ওয়াকফ্ স্টেট নামে ওই সম্পত্তিতে পুকুর আছে।

১৬ বছর ধরে কাহালুর আওয়ামী লীগ নেতা জামিল ভোগদখল করত। সে পালিয়ে যাওয়ার পর ভাতিজা রাহুল ও কয়েকজন ওই পুকুরে মাছচাষ করে আসছেন। পুকুর নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিষয়টি কাহালু থানা পুলিশকে একাধিকবার অবহিত করা হয়েছিল।

মঙ্গলবার দুপুরে রাহুল গ্রামে এসে হুইল বরশি দিয়ে ওই পুকুরে মাছ ধরছিলেন। এ সময় নেতা জামিলের ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী সেখানে আসে। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাহুলকে কোপায়। প্রাণ রক্ষায় সে একটি ফাঁকা বাড়িতে আশ্রয় নিলে সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৭-৮টি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এরপর হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। আবদুস সালাম সরকার অবিলম্বে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী জামিল ও তার লোকজনকে গ্রেফতার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

কাহালু থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাহবুবুর রহমান জানান, মালঞ্চা ইউনিয়নের মাগুড়া উত্তরপাড়া গ্রামে পুকুর নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ ছিল। যুবদল নেতা সোহেব সরকার রাহুল বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করেছে। লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

  • পুকুর
  • বিরোধ
  • যুবদল নেতা
  • হত্যা
  • #