নরসিংদীতে সড়কে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে পৌর শহরের আরশিনগরে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে আনোয়ার হোসেনের (সদর সার্কেল) নেতৃত্বে একটি টিম সদর উপজেলার পুরানপাড়া এলাকায় একনারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পরিদর্শনে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে শহরের আরশীনগর মোড়ে সড়কের মাঝখান থেকে কয়েকজন ব্যক্তি যানবাহনের চালকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ের সময় তিনি ও তার সঙ্গীয় ফোর্স দুই চাঁদাবাজকে হাতেনাতে আটক করে।
আটককৃত চাঁদাবাজদের ছাড়িয়ে নিতে ৩০/৪০ জন সন্ত্রাসী এসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে হুমকি দিতে থাকে। এতে পুলিশ সুপার তাদের ছাড়তে নারাজ হলে বিনা উষ্কানীতেই তারা পুলিশ সুপারের ওপর হামলা চালায় এবং কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে।
এক পর্যায়ে তিনি মাটিতে পরে গুরুতর আহত হন। এসময় সন্ত্রাসীরা দুই চাঁদাবাজকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. ফরিদা গুলশানা কবির বলেন, আনোয়ার হোসেনের ঘাড় ও পায়ে আঘাতজনিত রক্ত জমাট বেঁধেছে। তিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, আরশিনগর এলাকায় কয়েকজন চাঁদাবাজ চলন্ত যানবাহন থেকে জোরপূর্বক চাঁদা তুলছে। এসময় আমি দুই জনকে হাতেহাতে আটক করে তাদের জিজ্ঞাসা করতে থাকাবস্থায় মুহূর্তের মধ্যে ৩০-৪০ জনের একদল সন্ত্রাসী আমার ওপর হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমি মাটিতে পড়ে গেলে তারা কিল, ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। পরে আমার সঙ্গীয় ফোর্সসহ স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে নরসিংদীর নবাগত পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. কলিমুল্লাহ-এর মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেননি।
নরসিংদী পৌরসভার সিএনজি-অটোরিকশা স্ট্যান্ডের ইজারাদার মো. আলমগীর মুঠোফোনে জানান, আমি পৌরসভা থেকে বৈধভাবে স্ট্যান্ডের ইজারা নিয়েছি। কিন্তু অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন প্রায়ই ইজারার টাকা তুলতে বাধা দেয়। আজকেও আরশীনগর এলাকায় গিয়ে আমাদের লোকজনকে আটক করছিল।
তিনি আরও বলেন, পৌরসভার দেওয়া নিয়মনীতি অনুসরণ করেই ইজারার টাকা তোলা হয়। এ কাজে পুলিশ বাধা দেওয়ার কারণে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনতে পেরেছি। তবে পুলিশের ওপর হামলার খবর মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি পা পিছলে পড়ে যান বলে শুনেছি।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন পূর্বে নরসিংদী সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে জিরোটলারেন্স ঘোষণা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন এবং নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্ট্যাটাস দেন। একইসঙ্গে তার ওপর যেকোনো সময় হামলার আশঙ্কার কথাও ওই পোস্টে উল্লেখ করেন।