চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ১ নম্বর গেটে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় মাথায় আঘাত পেয়ে আহত হন হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) কাজী তারেক আজিজ। রাত ২টা পর্যন্ত মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে উভয়পক্ষ। বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত ৮টার পর ১ নম্বর গেট এলাকায় দুই দলের কর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়।
খবর পেয়ে রাত ১২টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে হট্টগোল হয়। এ সময় এএসপি কাজী তারেক আজিজের মাথায় আঘাত লাগে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলার এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
রাত ৯টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও আশপাশের এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল। উভয়পক্ষই গেটের দুই পাশে অবস্থান নেয় এবং বিভিন্ন কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিজয়ী প্রার্থীদের সমর্থকরা উল্লাস প্রকাশ করতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
হাটহাজারী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘জামায়াত–শিবিরের বহিরাগতরা এসে ১ নম্বর গেটে অবস্থান নিয়েছে। নির্বাচনে কারচুপি ও নানা অনিয়ম হয়েছে। সে কারণেই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছি।’
এদিকে চাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে উত্তেজনা ও হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিনকে প্রকৌশল অনুষদ ভবনের ভেতরে অবরুদ্ধ করে রাখেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের প্রচেষ্টা চলছে।
এদিকে রাত সোয়া ১২টার দিকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদে ডিন কার্যালয়ে ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী। সেখানে দেখা যায়, তিনটি হলের ফলাফলে ভিপি পদে ছাত্রদলের সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় এগিয়ে। এর আগে ঘোষিত শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেলে সাজ্জাদ ভোট পেয়েছেন ৩৪। রনি পেয়েছেন ২৭। মাস্টার দা সূর্যসেন হলে সাজ্জাদ পেয়েছেন ১৪০। রনি পেয়েছেন ১৩০ ভোট।
চাকসুতে এবার ভোটার প্রায় ২৭ হাজার ৫১৬ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১১ হাজার ১৫৬ জন। নির্বাচনে লড়তে প্রার্থী হয়েছেন ৯০৮ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ২৬ পদে লড়ছেন ৪১৫ প্রার্থী। একই সঙ্গে ১৪টি হল ও ১টি হোস্টেলে প্রার্থী হয়েছেন ৪৯৩ জন। কেন্দ্রীয় সংসদে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২২ জন ও সহসাধারণ সম্পাদক পদে ২২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।