মধ্যরাতে সাভারের আশুলিয়ার খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধশত আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তবে তাঁদের মধ্যে একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় সিটি ইউনিভার্সিটির। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো প্রকার সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেলের সামনে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী মোটরসাইকেল থেকে থুতু ফেললে তা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর গায়ে লাগে। এ নিয়ে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।
এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে গেলে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়।

ছবি : সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে ভাঙচুর
একপর্যায়ে রাত ১২টার পর ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির ভেতরে ঢুকে শিক্ষার্থীদের অবরোধ করে ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় তাঁরা প্রশাসনিক ভবন ভাঙচুরসহ লুট করে কম্পিউটারসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল। পুড়িয়ে ফেলে তিনটি বাসসহ একটি প্রাইভেট কার। ভাঙচুর চালানো হয় আরও পাঁচ যানবাহনে। ভোররাতে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে ফোটানো হয় ককটেল। এতে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু জায়গায় আগুন দেখা গেছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উত্তেজনার একপর্যায়ে গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে একজন সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিয়া জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনা যেন আর নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।