প্রাথমিকে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীত শিক্ষকের পদ বাতিল করল সরকার

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ৫ দিন আগে

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা ও সংগীত বিষয়ে সহকারী শিক্ষকের পদ বাতিল করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। কয়েকটি রাজনৈতিক ও ধর্মভিত্তিক সংগঠনের বিরোধিতার মুখে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

গত ২৮ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপনে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মূল বিধিমালায় চারটি পদ ছিল– প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) এবং সহকারী শিক্ষক (সংগীত)। সংশোধিত বিধিমালায় এখন শুধু প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক পদ রাখা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত রোববার সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করে।

মূলত শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঠিক রাখতে এবং সুস্থ দেশীয় সংস্কৃতি চর্চাকে উৎসাহিত করতে এই দুই বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় ২০২০ সালে। গতবছর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ দুটি বিষয়ে দুই হাজার ৫৮৩ জন করে পাঁচ হাজার ১৬৬টি শিক্ষকের পদ অনুমোদন করে। গত ২৮ আগস্ট নতুন নিয়োগ বিধির প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর বিরোধিতায় নামে ধর্মভিত্তিক কিছু রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।

গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষক হিসেবে আলেমদের নিয়োগ দেওয়ার দাবিতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ করে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক সেমিনারে জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক পাঁচটি দলের নেতারা বলেন, লেখাপড়ার মানের অবনতি ঘটায় শিক্ষার্থীর মানসিক ও আদর্শিক ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। সরকার সেদিকে লক্ষ্য না করে গানের শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে। তারা সংগীত শিক্ষকের জায়গায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান।

জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতাদের অংশগ্রহণে এ সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ। সেমিনারের মূল প্রবন্ধে মুফতি আবদুল্লাহ মাসুম ও মুফতি ইউসুফ সুলতান ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরেন।

প্রস্তাবের মধ্যে ছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ; ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫’ গেজেট

সংযোজন, নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের জন্য ধর্ম মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও মানোন্নয়নের ব্যবস্থা করা এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বী (হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান) শিক্ষার্থীর জন্যও তাদের ধর্ম অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা রাখা।

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ধর্মচর্চা ও সংস্কৃতিচর্চার মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। বরং শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে দুটিই সমানভাবে প্রয়োজন। তিনি বলেন, শুধু পাঠ্যবইকেন্দ্রিক জ্ঞান দিয়ে শিশুর মানসিক বিকাশ সম্ভব নয়। গান ও খেলাধুলায় অংশগ্রহণ প্রযুক্তিনির্ভর নেশা থেকেও শিশুদের দূরে রাখে। তিনি ক্রীড়া ও সংগীত শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল না করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

  • পদ
  • প্রাথমিক
  • বাতিল
  • শারীরিক শিক্ষা
  • সংগীত শিক্ষক
  • #