মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী আবুল সরকারকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তার ভক্ত ও অনুরাগীদের আয়োজিত শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে ‘তৌহিদি জনতা’ পরিচয়ে হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এ ধরনের হামলার প্রবণতা আইনের শাসন, মানবাধিকার সুরক্ষা ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার জন্য গভীর হুমকি বলে মনে করে মানবাধিকার সংগঠনটি।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এসব কথা জানায় আসক। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার বাউলশিল্পীর ক্ষেত্রে আইনানুগ প্রক্রিয়া, ন্যায়বিচার ও স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে আসক বলেছে, শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব, যা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে আরও সংঘাত, সহিংসতা ও সামাজিক অসহিষ্ণুতা বাড়তে পারে। শান্তিপূর্ণ মতপ্রকাশের অধিকার ও গণজমায়েতে হামলা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়; বরং এটি সংবিধান স্বীকৃত নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট উদাহরণ।
নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসক বলেছে, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ ও ৩৯ অনুচ্ছেদে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার ও সংস্কৃতিচর্চার স্বাধীনতা সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। বাউল ঐতিহ্যসহ দেশের সব সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ধারা রক্ষা করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কোনো গোষ্ঠীর মতাদর্শিক অবস্থান বা সামাজিক চাপের অজুহাতে শিল্প-সংস্কৃতির ওপর হামলা বা বাধা দেওয়ার চেষ্টা আইন ও মানবাধিকারের পরিপন্থি।
সম্প্রতি বাউলশিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের ওপর হুমকি ও হামলার একাধিক ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এসব ঘটনায় কার্যকর ও সময়োপযোগী আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় দেশে শিল্প–সংস্কৃতিবিরোধী গোষ্ঠী আরও উৎসাহিত হয়ে উঠছে এবং একই সঙ্গে হামলার ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটছে। চলমান এই প্রবণতা আইনের শাসন, মানবাধিকার সুরক্ষা ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার জন্য গভীর হুমকি বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।