পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমকে অপসারণের দাবিতে পুলিশ সদর দপ্তর ঘেরাওয়ের চেষ্টা করেছে ‘শহীদ পিন্টু স্মৃতি সংসদ’। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ সদরদপ্তর ঘেরাওয়ের উদ্দেশে শহীদ মিনার থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি বঙ্গবাজার মোড়ে আসলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় মিছিলকারীরা সড়কে বসে পড়লে সেখানে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। পরে আন্দোলনকারীরা সড়ক ছেড়ে দেন।
এর আগে, পুলিশ সদরদপ্তর এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। তবে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা গণমাধ্যমে কথা বলতে চাননি।
শহীদ পিন্টু স্মৃতি সংসদের সভাপতি রফিক আহমেদ ডলার বলেন, পিন্টুর মৃত্যু ‘পরিকল্পিত হত্যা’। আদালতের চিকিৎসা নির্দেশ অমান্য করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। রিমান্ড ও নির্যাতনের কারণে তাঁর চোখ নষ্ট হয়। বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনও হত্যাকাণ্ডকে পরিকল্পিত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শহীদ পিন্টুর হত্যার বিচারের দাবিতে তারা আইজিপি বাহারুল আলমকে অবিলম্বে অপসারণ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাচ্ছেন।
নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু পিলখানায় হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। ২০১৫ সালের ৩ মে কারা হাসপাতালে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়। পরিবার ও বিএনপি এটিকে ‘কারা হেফাজতে হত্যা’ বলে দাবি করে আসছে।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদরদপ্তরে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। সেই সময় পুলিশের বিশেষ শাখার দায়িত্বে ছিলেন বাহারুল আলম, যিনি বর্তমানে বাংলাদেশের পুলিশপ্রধান।
হত্যাকাণ্ডের দেড় দশক পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর পুনঃতদন্তের দাবি ওঠে। ২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন ৩০ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে ‘দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার’ জন্য নাম এসেছে বর্তমান আইজিপি বাহারুল আলমের।
৯ ডিসেম্বর আইজিপি বাহারুল আলমকে অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে শহীদ পিন্টু স্মৃতি সংসদ। পাশাপাশি ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা প্রয়াত নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু হত্যার বিচার দাবি করে তারা।
এর আগে, ৭ ডিসেম্বর বিএনপি নেতা পিন্টু স্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় তিনি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে তৎকালীন এসবির প্রধান ও বর্তমান আইজিপি বাহারুল আলমের অপসারণ ও বিচারের দাবিও করেন।