আসন্ন চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১০ জন প্রার্থীর নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হয়েছে পুরোদমে। নির্বাচনের সময় বেশি বাকি নাই। তীব্র গরমের মধ্যে গণসংযোগের মাধ্যমে নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। প্রার্থিতা উন্মুক্ত করায় অর্থাৎ দলীয় প্রার্থী না থাকার চেয়রাম্যানের পদে ভোটের লড়াই হবে ত্রিমুখী। তিনজনেই অত্র উপজেলার বেশ জনপ্রিয় ব্যক্তি। তাহলে হিসেব অনুযায়ী লড়াই হবে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের মধ্যে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানের চায়ের দোকানে চলছে মুখরোচক নির্বাচনি আমেজ, প্রার্থীরা তাদের কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে পোস্টার, লিফলেট বিতরণের মধ্য দিয়ে ভোট চাইতেদেখা যায়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভোটারদের মন জয় করতে দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৩ জন হেভিওয়েট প্রার্থী। তার মধ্যে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান কাপ-পিরিজ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। উপজেলার উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান বলেন, উপজেলার উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে আনারস প্রতীকে ভোট দিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে পুনরায় নির্বাচিত করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গতবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিবাচিত হন তিনি। আইয়ুব আলী বেপারী বলেন, আমি সাধারণ মানুষের পাশে থেকে উপজেলার উন্নয়ন করতে চাই। মানুষ যদি আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে তাহলে আমি উপজেলার উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের পাশে থাকব।
এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন শিক্ষনুরাগী ও আইনজীবী, চাঁদপুর সদর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক, অ্যাড. হুমায়ুন কবির সুমন। তিনি বলেন, আমি সবসময় আপনাদের পাশে রয়েছি। চাঁদপুর সদর উপজেলাকে স্মার্ট উপজেলায় পরিণত করার লক্ষ্যে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এবার চেয়ারম্যান পদে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান কালু ভূইয়া। জয়ী হবার নিমিত্তে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। নির্বাচিত হলে চাঁদপুর সদর উপজেলাকে একটি স্মার্ট উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবেন বলে তিনি জানান।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আরেকজন নবীন প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন তরুণ ও মেধাবী ছাত্রনেতা মো. রাকিব মাঝি। তিনি প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রচার প্রচারণা গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জয়ের ব্যাপারে তিনিও আশাবাদী।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন চশমা প্রতীক নিয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবিএম রেজওয়ান, টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজের সাবেক এজিএস নুরুল হায়দার সংগ্রামী এবং তালা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ হাওলাদার।
এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে লড়ছেন তিন জন। পদ্মফুল প্রতীক নিয়ে লড়বেন রেবেকা সুলতানা মুন্না, ফুটবল মার্কা নিয়ে লড়ছেন শিপ্রা দাস, তাছাড়া হাঁস প্রতিক নিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন মনোয়ারা বেগম।
ভোটারদের মন জয় করতে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা প্রতিদিন ব্যবহার করছেন নতুন নতুন কৌশল। চলছে পোস্টার, ফেস্টুন ও লিফলেট বিতরণ। সেই সঙ্গে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ, পথসভা ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।
চাঁদপুর সদর উপজেলায় মোট ১৪টি ইউনিয়ন ও ১৫টি ওয়ার্ড। মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৪টি। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লক্ষ ১৭ হাজার ৬৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ১৬ হাজার ৭৮৭ জন। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ২৭৮ জন।