চলতি বছর নভেম্বরে সারাদেশে ৫৩৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৮৩ জন। আহত হয়েছেন আরও এক হাজার ৩১৭ জন। এর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাতেই নিহত হয়েছেন ১৯৪ জন, যা মোট নিহতের ৪০ দশমিক ১৬ শতাংশ। যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সংগঠনটির এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, অক্টোবর মাসের তুলনায় নভেম্বরে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি উভয়ই বেড়েছে। অক্টোবরে ৪৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ৪৪১ জন। ওই মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৪ দশমিক ২২ জন নিহত হলেও নভেম্বর মাসে তা বেড়ে দৈনিক গড়ে ১৬ দশমিক একজনে দাঁড়িয়েছে। অক্টোবরে সবচেয়ে বেশি, ১৩৭ জন নিহত হয়েছিলেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১০৬ জন পথচারী এবং ৫৭ জন যানবাহনের চালক ও সহকারী। নিহতদের মধ্যে নারী ছিলেন ৬৪ জন এবং শিশু ৭১ জন।
নিহতদের মধ্যে শিক্ষার্থী ছিলেন ৫৭ জন। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ের ব্যবসায়ী ২৩ জন, ওষুধ ও বিভিন্ন পণ্য বিক্রয় প্রতিনিধি ১৭ জন, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ১৪ জন এবং শিক্ষক ১৩ জন রয়েছেন।
বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নভেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে ১৪১টি দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগে; ৩০টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৪ জন।
সময়ের ভিত্তিতে দুর্ঘটনার চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, নভেম্বর মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে সকালে– ২০ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং দুপুরে ঘটেছে ১৯ দশমিক ১০ শতাংশ দুর্ঘটনা।
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ বিশ্লেষণে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও সড়ক অবকাঠামো, বেপরোয়া গতি ও চালকদের অদক্ষতার কারণে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সংগঠনটি দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ জোরদার করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, ট্রাফিক আইনের কঠোর ও সমান প্রয়োগ নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে। তাছাড়া সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।