ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহি রাইসি মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির গণমাধ্যম ইরনা ইন্টারন্যাশন্যাল। হেলিকপ্টারে রাইসির সঙ্গে থাকা ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির-আব্দুল্লাহিয়ান ও তাদের সফরসঙ্গী সবাই নিহত হয়েছেন। সোমবার (২১ মে) প্রতিবেদনে মেহের নিউজ এজেন্সি জানিয়েছি, ইরানের রাষ্ট্রপতি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতিসহ হেলিকপ্টারের অন্যান্য আরোহীরা ‘শহিদ’ হয়েছেন। তবে রাইসি কিংবা হেলিকপ্টারের অন্য আরোহীদের মৃত্যুর বিষয়ে দেশটির কর্তৃপক্ষ এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, রেড ক্রিসেন্ট থেকে এই তথ্য দেয়ার পর আশঙ্কা করা হচ্ছে হেলিকপ্টারটির কোনও যাত্রী হয়তো বেঁচে নেই।
এর আগে ইরানি রেড ক্রিসেন্টের প্রধান পীর হোসেন কোলিভান্দ জানিয়েছেন, এখন আমরা উদ্ধারকারী দলের কাছ থেকে ভিডিও পাচ্ছি। তারা বলছেন, হেলিকপ্টারের পুরো কেবিন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত ও পুড়ে গেছে। তারা আরও জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে এখন পর্যন্ত কারও বেঁচে থাকার কোনও চিহ্ন নেই।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি বলছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার মুখে পড়ার পর সেখানে কারও জীবিত থাকার ‘কোনও চিহ্ন’ নেই বলে ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি বলছে। অন্যদিকে ইরানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স আরও জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারটি ‘সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে’।
৬৩ বছর বয়সী রাইসির দুর্ঘটনায় বড় কোনও ক্ষতি হলে ইরানের সংবিধান অনুযায়ী দেশের দায়িত্ব নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবার। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার অনুমোদন সাপেক্ষে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন তিনি। একই সঙ্গে ৫০ দিনের মধ্যে নতুন নির্বাচন করতে হবে। যেটির মাধ্যমে দেশে আবার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হবে।
এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে নিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত হেলিকপ্টারটির খোঁজ পাওয়ার পর রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে ওই হেলিকপ্টারে কেউই জীবিত থাকার লক্ষণ নেই।
এর আগে রোববার (১৯ মে) বিকেলে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয় প্রেসিডেন্ট রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহিয়ানকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি। আজারবাইজান সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি বাঁধ উদ্বোধন করে ফিরছিলেন রাইসি।
আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় গতকাল দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভও ছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন ইব্রাহিম রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা। পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।