টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের কাছে হেরে সুপার এইটে ওঠার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মিশন শেষ করতে হচ্ছে। শনিবার অ্যান্টিগায় সুপার এইটের ম্যাচে টাইগারদের ৫০ রানে হারিয়েছে ভারত। শুরুতে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৬ রান করে ভারত। পরে ওই রান তাড়া করতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে চার ম্যাচের তিনটি জিতে সুপার এইটে উঠা বাংলাদেশ হেরেছিল অস্ট্রেলিয়ার কাছেও। টানা দুই হারে শেষ হয়ে গেছে সেমিফাইনালের স্বপ্ন।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ছিল ভারত। তবে বেশি আক্রমণাত্মক হওয়া রোহিত শর্মাকে বাংলাদেশ ফিরিয়ে দিতে পারে দ্রুতই। ১১ বলে ২৩ রান করে সাকিব আল হাসানের বলে রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। প্রথম বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পঞ্চাশ উইকেট পূর্ণ হয় সাকিবের।
পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৫৩ রান করে ভারত। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে দুই উইকেট তুলে নেন তানজিম হাসান সাকিব। উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে বোল্ড আউট হন বিরাট কোহলি। ২৮ বলে ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৭ রান করেন তিনি।
এক বল পরই সূর্যকুমার যাদবকে আউট করেন তানজিম। আগের বলে ছক্কা হাঁকানো ব্যাটার এবার ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। উইকেটে এসে শুরুর দিকে থিতু হলেও পরে বাউন্ডারি হাঁকাতে শুরু করেন ঋষভ পান্ত। তাকে ফেরান রিশাদ হোসেন।
টানা দুই বলে ছক্কা ও চার হাঁকানোর পরের বলে রিভার্স সুইপ করতে যান পান্ত। কিন্তু ক্যাচ যায় শর্ট থার্ড ম্যানে দাঁড়িয়ে থাকা তানজিমের কাছে। ২৪ বলে ৩৬ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। পান্তের বিদায়ের পর আক্রমণের দায়িত্ব কাঁধে নেন শিভাম দুবে। তাকেও ফেরান রিশাদ। এবারও আগের বলে ছক্কা খাওয়ার পরের বলে ঝুলিয়ে দেন তিনি, তুলে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান শিভাম দুবে। ২৪ বলে ৩ ছক্কা ৩৪ রান করেন তিনি।
ভারতের হয়ে শেষটা দারুণ করেন হার্দিক পান্ডিয়া। মোস্তাফিজুর রহমানের শেষ ওভারে ১৮ রান নেন তিনি। স্রেফ ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন পান্ডিয়া। তানজিম হাসান ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন, দুই উইকেট পাওয়া রিশাদ ৩৩ রান দেন।
এক বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট এখন তানজিমের, এবার নিয়েছেন ১১ উইকেট। এবার তার সমান উইকেট রিশাদেরও। ২০২১ সালে সাকিব আল হাসান ১০ উইকেট পেয়েছিলেন, সেটি এতদিন ছিল সর্বোচ্চ।
রান তাড়ায় নেমে শুরুটা ভালো করে বাংলাদেশও। চার ওভারে ২৭ রান তোলেন দুই ওপেনার। এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায় পরের ওভারের তৃতীয় বলে। আগের বলে ছক্কা হাঁকানোর পর হার্দিক পান্ডিয়াকে তুলে মারতে যান লিটন। এবার তিনি ক্যাচ দেন পাওয়ার প্লের সময় বাইরে থাকা দুই ফিল্ডারের একজনকে। হার্দিকের স্লোয়ার বলে ডি স্কয়ার লেগে ভালো ক্যাচ নেন সূর্যকুমারও।
পাওয়ার প্লেতে আর উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ, করে কেবল ৪২ রান। তবে ১০ ওভারের ভেতরই আরও এক উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। এবার কুলদ্বীপ যাদবের গুগলিতে এলবিডব্লিউ হন তানজিদ হাসান তামিম। রিভিউ নেওয়ার পর ৩১ বল খেলে ২৯ রান করে আউট হন তিনি।
এরপর তাওহীদ হৃদয়কে পরের ওভারে এসে ফেরান কুলদ্বীপ। ৬ বলে ৪ রান করে তিনিও এলবিডব্লিউ হন। অধিনায়ক শান্ত এক প্রান্তে কিছু রান করছিলেন। এর মধ্যে উইকেটে এসে আরও একবার ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন সাকিব। ৭ বলে ১১ রান করে কুলদ্বীপের বলেই রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি।
অধিনায়ক শান্ত ফেরেন হাফ সেঞ্চুরি তোলার আগে। ৩২ বলে ৪০ রান করে আর্শ্বদ্বীপ সিংয়ের বলে আউট হন তিনি। এই ম্যাচের একমাত্র বদলটিও কাজে আসেনি। ৪ বলে ১ রান করে আউট হন জাকের আলি।
এরপর উইকেটে এসে ঝড় তোলেন রিশাদ হোসেন। অক্ষর প্যাটেলকে দুটি ছক্কা হাঁকান তিনি। কিন্তু বুমরাহর সামনে আর পেরে উঠেননি। পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন এক্সট্রা কাভারে দাঁড়ানো রোহিত শর্মার হাতে। ১০ বলে ২৪ রান করে আউট হন রিশাদ।
এক বল বাকি থাকতে আউট হওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৫ বলে করেন ১৩ রান। ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ বাংলাদেশের ব্যাটিং আরও একবার হতাশ করে। বাংলাদেশকে তাই বিদায় বলতে হচ্ছে সুপার এইট থেকেই।