কোটাবিরোধী আন্দোলনে হত্যা, গণহত্যা ও নির্যাতনে উস্কানি দেওয়ার ঘটনায় সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, নঈম নিজাম, ফরিদা ইয়াসমিন, মুন্নী সাহা, সোমা ইসলামসহ মোট ৫৩ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৯ জন সাংবাদিক। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আন্দোলনে নিহত রিয়ানের বাবা আব্দুর রাজ্জাক এ অভিযোগ দাখিল করেন। বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, মো. আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, হাসানুল হক ইনু, মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জুনায়েদ আহমেদ পলক, মোহাম্মাদ আলী আরাফাত, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আতিকুল ইসলাম, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন আর রশিদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক র্যাব প্রধান মো. হারুন আর রশিদ, বিপ্লব কুমার সরকার, জিয়াউল আহসান, আদাবর থানার সাবেক ওসি মো. মাহাবুব রহমান, সাদ্দাম হোসেন (সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ), শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান (সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ), এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক (সাবেক বিচারক, আপিল বিভাগ), মুহাম্মদ জাফর ইকবাল (অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), নিঝুম মজুমদার (আইনজীবী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট), মেজবাহ কামাল (অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), নাঈমুল ইসলাম খান (সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব)।
অন্যরা হলেন- ইকবাল সোবহান চৌধুরী (সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা), ফরিদা ইয়াসমিন (সভাপতি, প্রেস ক্লাব, ঢাকা ও সাবেক এমপি), শ্যামল দত্ত (সাধারণ সম্পাদক, প্রেস ক্লাব, ঢাকা), মোজাম্মেল বাবু (সিইও, প্রধান সম্পাদক, একাত্তর টিভি), নবনীতা চৌধুরী (সাংবাদিক ও টিভি সঞ্চালক), সুভাষ সিংহ রায় (সম্পাদক, এবি নিউজ২৪ডটকম), আহমেদ যোবায়ের (এমডি, সময় টিভি), তুষার আব্দুল্লাহ (সাবেক বার্তা প্রধান, সময় টিভি; বার্তা প্রধান, এখন টিভি), সাইফুল আলম (সম্পাদক, যুগান্তর), নঈম নিজাম (সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন), আবেদ খান (সাবেক সম্পাদক, সমকাল), প্রভাষ আমিন (বার্তা প্রধান, এটিএন নিউজ), ফারজানা রুপা (সাবেক প্রধান প্রতিবেদক, একাত্তর টিভি), শাকিল আহমেদ (বার্তা প্রধান, একাত্তর টিভি), মিথিলা ফারজানা (হেড ও কারেন্ট এফেয়ার্স, একাত্তর টিভি), জায়েদুল আহসান পিন্টু (সম্পাদক, ডিবিসি), মঞ্জুরুল ইসলাম (প্রধান সম্পাদক, ডিবিসি), আশীস সৈকত (প্রধান বার্তা সম্পাদক, ইন্ডিপেনডেন্ট টিভি), মানষ ঘোষ (হেড অব নিউজ, এশিয়ান টিভি), প্রণব সাহা (ডিবিসি), মাসুদা ভাট্টি (বাংলাদেশের সাবেক তথ্য কমিশনার), মুন্নি সাহা (সাবেক প্রধান নির্বাহী সম্পাদক, এটিএন নিউজ), জ ই মামুন (সাবেক প্রধান নির্বাহী সম্পাদক, এটিএন বাংলা), স্বদেশ রায় (নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক জনকণ্ঠ), সোমা ইসলাম (চ্যানেল আই), শ্যামল সরকার (ইত্তেফাক), অজয় দাশ (সমকাল), আশরাফুল আলম খোকন (সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব)।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০ থেকে ৪৯ নম্বর আসামিরা আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যাকে বৈধতা দিতে প্ররোচনা ও উসকানি দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাদের দাবি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে মিথ্যা খবর প্রচার করেছেন। পাশাপাশি আহত ও নিহতদের সঠিক তথ্য গোপনের উদ্দেশ্যে টক-শো, কলাম লিখে ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সত্য আড়াল করে গুজব ও মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছেন। আন্দোলন চলমান অবস্থায় তারা আসামি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে ‘আমরা আপনার সাথে আছি’ বলে সরাসরি গণহত্যায় প্ররোচনা ও উসকানি দিয়েছেন।