মুন্সিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নুর মোহাম্মদ সরদার (১৯) নামের এক দিনমজুর গুলিতে নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা হয়েছে। এতে সাবেক চার সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬১৩ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার নিহত নুর মোহাম্মদের নানি সেফালী বেগম বাদী হয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ৩১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০০–৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ৪ আগস্ট সকালে মুন্সিগঞ্জ শহরে সুপার মার্কেট এলাকার কৃষি ব্যাংকসংলগ্ন স্থানে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ অসহযোগ আন্দোলন চলছিল। ওই সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সাল, মৃণাল কান্তি দাস ও সাগুফতা ইয়াসমিন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিনের যৌথ নির্দেশে অস্ত্র, ককটেল, ছুরি, রামদা নিয়ে আসামিরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালান। ওই সময় শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম, পঞ্চসার ইউপির চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা ও তাঁর ভাই গোলাম কিবরিয়াসহ ১২ জন গুলি চালান। নুর মোহাম্মদকে লক্ষ্য করে বুকে গুলি করে মামলার ১৮ নম্বর আসামি শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত হোসেন। পরে অন্য আসামিরা তাঁকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। এ ছাড়া তাঁরা ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে, ককটেল বিস্ফোরণ করে, পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেন।
ঘটনার পর নুর মোহাম্মদকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ওই দিন সংঘর্ষে রিয়াজুল ফরাজী ও সজল মোল্লা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, বাদীর দেওয়া এজাহারের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। এ মামলার সব আসামি পলাতক। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।