বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করায় তাঁর কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বেলা সোয়া ১টায় উপাচার্যর কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে বিক্ষোভ চলাকালে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আলটিমেটাম ঘোষণা করা হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ না করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে বিতর্কিত আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করেন উপাচার্য শুচিতা শরমিন। বিগত তিন মাসে ভিসি শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো কাজ করেননি। এ কারণে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবি তোলেন।
এদিকে ক্যাম্পাসে শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠিত সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের থাকার কথা থাকলেও তাঁর নাম বাদ দিয়ে সেখানে প্রো-ভিসিকে প্রধান অতিথি করেছেন ছাত্ররা।
‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী দোসরদের কালো থাবা থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও’ ব্যানারে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তাঁরা ভিসির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
এদিকে নতুন নিয়োগ পাওয়া কোষাধ্যক্ষ কর্নেল (অব.) আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান গত মঙ্গলবার রাতে যোগদান করতে এলে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তিনি যোগদান না করেই ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিন বলেন, তাঁরা দুর্নীতিবাজ কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবু হেনা মোস্তফা কামাল খানের যোগদান ঠেকাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য, শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর চিঠি দিয়েছেন। কেননা, নতুন কোষাধ্যক্ষ রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার থাকাকালীন ড. কলিমুল্লাহর সঙ্গে দুর্নীতির ভাগিদার ছিলেন। আমার বিশ্ববিদ্যালয় বহির্ভূত সামরিক কর্মকর্তাকে ট্রেজারার চাই না। অনতিবিলম্বে তাঁর প্রত্যাহার চাই।
ভিসি ড. সুচিতার পদত্যাগ ইস্যুতে ড. জামাল উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ছাত্ররা আমাদের সব। ছাত্ররা যা চায় তা যৌক্তিক হলে শিক্ষকেরা পাশে আছেন এবং থাকবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে ক্যাম্পাসে নেই ববি ভিসি ড. শুচিতা শরমিন। গতকাল বুধবার এবং আজ বৃহস্পতিবার তিনি আর ক্যাম্পাসে আসেননি। কেন আসেনি তা জানতে ড. শুচিতাকে ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসিকে ড. গোলাম রাব্বানী বলেন, তিনি শুনেছেন যে আন্দোলনকারী ছাত্ররা উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা দিয়ে স্টাফদের বের করে দিয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের আহ্বানে মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত শহিদদের স্মরণে সভায় অংশ নেওয়ায় ওই ঘটনার আর খোঁজ নিতে পারেননি।