স্কুলছাত্র গ্রেপ্তার, দেওয়া হলো না পরীক্ষা

: যথাসময় ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ঘন্টা আগে

কুমিল্লায় ‘ছাত্রলীগ’ পরিচয়ে এক স্কুলছাত্রকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এতে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ইমরান হোসেন। সে নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢালুয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে তার বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হলেও বর্তমানে সে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি।

গত সোমবার গভীর রাতে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ইমরান ঢালুয়া ইউনিয়নের চিওড়া গ্রামের ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ইসহাক মিয়ার ছেলে।

পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাতে আটক করার পর পরদিন নাঙ্গলকোট থানায় এসআই আলমগীর হোসেন সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেন।

২৫ জনের নাম-পরিচয়সহ ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়। সেই মামলার ৬ নম্বর আসামি ইমরান। গত মঙ্গলবার বিকেলে কুমিল্লার শিশু আদালত-১ তাকে কারাগারে পাঠায়। এজাহারে ইমরানের পরিচয় ‘ছাত্রলীগকর্মী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এজাহারে বলা হয়, নাঙ্গলকোটের ঢালুয়া ইউনিয়নের চিলপাড়া-উরকুটি রাস্তায় মনতলী ব্রিজের পাশে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ৫০-৬০ জন নেতাকর্মী একত্র হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের প্রতিবাদে সরকারবিরোধী স্লোগান দেয় এবং ঝটিকা ও মশাল মিছিল করে। পুলিশ গিয়ে ১ নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করে। তার জিজ্ঞাসাবাদে ইমরানসহ অন্যদের নাম পাওয়া গেছে বলে দাবি পুলিশের।

তবে পরিবারের অভিযোগ, পুরো ঘটনাই ভিত্তিহীন। ইমরান কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত নয়।ইমরানের বাবা ইসহাক মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি নিজেও কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। সোমবার রাত ৩টার দিকে পুলিশ বাড়ি থেকে তার ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। পরদিন সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ছেলের পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিয়ে থানায় গিয়েও কোনো সমাধান পাননি। আদালতও জামিন দেননি।’

তিনি বলেন, ‘সবার ছেলে-মেয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে, আমার ছেলেটা কারাগারে। কোনো প্রমাণ ছাড়া তাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি দ্বারে দ্বারে ঘুরছি ছেলের মুক্তির জন্য।’

ঢালুয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেন মজুমদার জানান, ইমরান তাদের প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত শিক্ষার্থী। তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কোনো তথ্য তার কাছে নেই। তিনি ইমরানের মুক্তি দাবি করেন।

নাঙ্গলকোট থানার ওসি এ কে ফজলুল হক বলেন, ঘটনার রাতে আরো কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ইমরানের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে দাবি করেন তিনি। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হলে তাকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হবে।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খান বলেন, শেখ হাসিনার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে এলাকায় কিছু ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হলে চার্জশিটে নাম থাকবে না।

সূত্র : কালের কণ্ঠ

  • গ্রেপ্তার
  • পরীক্ষা
  • স্কুলছাত্র
  • #